শ্রীলঙ্কায় বিক্ষোভ-সহিংসতা দমনে গুলি করার নির্দেশ
# সংসদ সদস্যদের পালিয়ে যাওয়া ঠেকাতে বিমানবন্দরের সামনে বিক্ষোভকারীদের অবস্থান।
# মাহিন্দা রাজাপক্ষের ছোট ভাই গোতাবায়াকে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার দাবি।
# নাশকতা ঠেকাতে নিরাপত্তা বাহিনীকে গুলি চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
এএফপি
রয়টার্স
কলম্বো
শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়েও জনরোষ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না মাহিন্দা রাজাপক্ষে। বিক্ষুব্ধ হাজারো মানুষ ঢুকে পড়েছিলেন তাঁর সরকারি বাসভবনে। একপর্যায়ে পালিয়ে সামরিক বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভবন ছাড়েন তিনি। পরে ঠাঁই নিয়েছেন একটি নৌঘাঁটিতে। ওই নৌঘাঁটির বাইরেও বিক্ষোভ চলছে।
মঙ্গলবারও কারফিউ ভেঙে রড-লাঠি হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। মাহিন্দার ছোট ভাই প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের দাবি করছেন তাঁরা। বিরোধী দলগুলোও তাঁর পদত্যাগ দাবি করেছে।
গত সোমবার দুপুরে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাতে আরও বড় আকার ধারণ করে। প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছাড়াও হাম্বানটোটায় তাঁদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা হয়। পুড়িয়ে দেওয়া হয় পারিবারিক জাদুঘর। এ ছাড়া ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অর্ধশতাধিক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এসব নেতার মধ্যে অনেক মন্ত্রী-এমপি রয়েছেন। এসব সহিংসতার ঘটনায় মঙ্গলবার পর্যন্ত অন্তত আটজন নিহত এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এই সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শ্রীলঙ্কার রাজনীতিবিদদের পালিয়ে আসার খবরকে গুজব বলল ভারত
অর্থনৈতিক সংকটে টালমাটাল শ্রীলঙ্কায় খাবার ও ওষুধের মতো জরুরি পণ্যেরও সংকট দেখা দিয়েছে। বিক্ষুব্ধ জনগণ এর জন্য সরকারকে দায়ী করছেন। সরকার পতনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চলছে। শান্তিপূর্ণ এই আন্দোলন সহিংস রূপ নেয় সোমবার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের অনুসারীরা তাঁদের ওপর হামলা চালানোর পর। এরপর হাজার হাজার মানুষ রাজধানী কলম্বোসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বেরিয়ে আসেন। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, সংসদ সদস্য এবং সাবেক–বর্তমান মন্ত্রীদের বাড়িতে হামলা চালান তাঁরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকেরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যেসব বাসে করে কলম্বোয় এসেছিলেন, সেগুলো পুড়িয়ে দিচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। মাহিন্দার দলের এক সংসদ সদস্যের গাড়ি ধাক্কা দিয়ে জলাশয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, মাহিন্দা রাজাপক্ষের দলের এক নেতাকে পেটানোর পর তাঁকে ময়লা ফেলায় ব্যবহৃত ঠেলাগাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া তাঁর ব্যবহৃত গাড়িটি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
শ্রীলঙ্কার আইনপ্রণেতাদের দেশত্যাগ ঠেকাতে রাজধানী কলম্বোর বিমানবন্দরের প্রবেশমুখে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, একদল তরুণ কাতুনায়েকে মুক্ত বাণিজ্য এলাকার সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা রাস্তায় আড়াআড়ি যানবাহন রেখে অবরোধ করেছেন। ওই সড়ক দিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রধান বিমানবন্দর বন্দরনায়েক ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে যেতে হয়।

No comments