কোরআন ও তাকলীদ
কোরআন ও তাকলীদঃ প্রধানতঃ তাকলীদ দুই প্রকার (মুক্ততাকলীদ) ও (ব্যক্তিতাকলীদ)।
শরীয়তের পরিভাষায় সকল বিষয়ে নির্দিষ্ট মুজতাহিদের পরিবর্তে বিভিন্ন মুজতাহিদের সিদ্ধান্ত অনুসরণের নাম তাকলীদে মুতলাক বা মুক্ততাকলীদ। পক্ষান্তরে সকল বিষয়ে নির্দিষ্ট মুজতাহিদের সিদ্ধান্ত অনুসরণের নাম তাকলীদে শাখী বা ব্যক্তিতাকলীদ।
অবশ্য উভয় তাকলীদেরই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ নিজস্ব যােগ্যতার অভাবহেতু সুগভীর জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারী মুজতাহীদের পরিবেশিত ব্যাখ্যা ও সিদ্ধান্তের আলােকে কোরআন-সুন্নাহর উপর আমল করে যাওয়া। বলাবাহুল্য, যে, উপরােক্ত অর্থে তাকলীদের বৈধতা ও অপরিহার্যতা কোরআন সুনাহর অকাট্য দলিল দ্বারা সুপ্রমাণিত।
প্রথমে আমরা তাকলীদের সমর্থনে কোরআনুল কারীমের কয়েকটি আয়াত কিঞ্চিত ব্যাখ্যা সহ পেশ করবাে!
اتها التي يناموا أطرابله
رايا السل و أولي الأمر مگه (سورة النساء ۵۹)
হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর ইতায়াত করাে এবং রসূলের ইতায়াত করাে। আর তােমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর’ তাদেরও।।
প্রায় সকল তাফসীরকারের মতে আলােচ্য আয়াতের উলিল আমর’ শব্দটি দ্বারা কোরআন-সুন্নাহর ইলমের অধিকারী ফকীহ ও মুজতাহিদগণকেই নির্দেশ করা হয়েছে। এ মতের স্বপক্ষে রয়েছেন হযরত জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু আনহু। হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাযিয়াল্লাহু আনহু। হযরত মুজাহেদ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি। হযরত আতা বিন আবী বারাহ রাহমাতুল্লাহি
মাযহাব কি ও কেন? হে ঈমানদারগণ! তােমরা আল্লাহ ও রাসূলের ইতায়াত করাে এবং তােমাদের মধ্যে যারা উলিল আমর’ তাদেরও। কোন বিষয়ে তােমাদের মধ্যে। মতবিরােধ দেখা দিলে তােমরা তা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সমীপেই পেশ করাে, যদি আল্লাহ এবং আখেরাতের উপর তােমরা ঈমান এনে থাকো।
এ সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য এই যে, আয়াতের প্রথমাংশে সর্বসাধারণকে এবং শেষাংশে মুজতাহিদগণকে সম্বােধন করা হয়েছে। আহকামুল কোরআন প্রণেতা আল্লামা আবু বকর জাসাসের ভাষায়
می شوند إلى قوله تعالى عقب ذلك قان تان اللودال
، يدل على أن ولي الأمرهم المهاراته ام سائر الناس بطاعتهم ثم قال
فان انه الخام الى الامر
تو نبی صلی الله عليه بدر المتناع وال كاي ال
ماذا كانت الكاتم ممن ليس
من أهل الي ليست لهم م تهم إنهم لا ينفون كيف الائى تابان والشة
أت بخطاب علاء جو دلالهما
على أحكام الترابي ف
। •১৩৫) অংশটি সুস্পষ্টরূপে প্রমাণ করে যে, , এর অর্থ ফকীহ ও মুজতাহিদ ছাড়া অন্য কেউ নয়। অথাৎ সর্বসাধারণকে উলিল আমর বা মুজতাহিদের ইতায়াতের হুকুম দিয়ে তাঁদেরকে বিরােধপূর্ণ বিষয়গুলাে কোরআন ও সুন্নাহর আলােকে সমাধান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেননা সাধারণ লােকের সে যােগ্যতা নেই। সুতরাং অবধারিতভাবেই বলা যায় যে, আয়াতের শেষাংশে আলিম ও মুজতাহিদগণকে সম্বােধন করা হয়েছে।
সুপ্রসিদ্ধ আহলে হাদীস পণ্ডিত আল্লামা নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান সাহেবও 3ে গ্রন্থে এ কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর ভাষায়ঃ
ت ستأنف مره لمجتهی
والا انه خطاب
স্পষ্টতঃই এখানে মুজতাহিদগণকে স্বতন্ত্রভাবে সম্বােধন করা হয়েছে।
মাযহাব কি ও কেন? মােটকথা, আলােচ্য আয়াতের প্রথমাংশের নিদের্শমতে সাধারণ লােকেরা উলিল আমর তথ্য মুজাহিদগণের বাতানাে মাসায়েল মােতাবেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহ ও রাসূলের ইতায়াত করবে। পক্ষান্তরে আয়াতের শেষাংশের নির্দেশ মতে মুজতাহিদগণ তাদের ইজতিহাদ প্রয়ােগের মাধ্যমে কোরআন-সুন্নাহ থেকে সরাসরি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। সুতরাং ইজতিহাদের যােগ্যতাবঞ্চিত লােকেরাও বিরােধপূর্ণ বিষয়ে কোরআন হাদীস চষে নিজেরাই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে; এ ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন উক্তির কোন অবকাশ আলােচ্য আয়াতে নেই। দ্বিতীয় আয়াতঃ
ه
ل إذكاءهم أمتين الأمن
والكوفي آذاڅاپه
كه الين يست ونه إلى
التسول والى أولي الأم مه
هم ( نشاء، ۸۳)
তাদের (সাধারণ মুসলমানদের) কাছে শান্তি ও শংকা সংক্রান্ত কোন খবর এসে পৌঁছলে তারা তার প্রচারে লেগে যায়। অথচ বিষয়টি যদি তারা রাসূল এবং উলিল আমরগণের কাছে পেশ করতাে তাহলে ইস্তিদাত ও সূক্ষ বিচারশক্তির অধিকারী ব্যক্তিগণ বিষয়টি (রাসূল রহস্য উদঘাটন করতে পারতাে।
আয়াতের শানেনুকূল এই সুযােগ পেলেই মদিনার মুনাফিকরা যুদ্ধ ও শান্তি সম্পকে নিত্য নতুন গুজব ছড়াতাে। আর সে গুজবে কান দিয়ে দু'একজন সরলমনা ছাহাবীও অন্যদের কাছে তা বলে বেড়াতেন। ফলে মদিনায় এক অস্বস্তিকর ও অরাজক অবস্থা সৃষ্টি হতাে। তাই ঈমানদারদের সর্তক করে দিয়ে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন; যুদ্ধ ও শান্তি সংক্রান্ত যে কোন খবরই আসুক, নিজস্ব সিন্ধান্ত গ্রহণের পরিবর্তে তাদের কর্তব্য হলাে, উলিল আমরগণের শরণাপন্ন হওয়া এবং অনুসন্ধান ও বিচার বিশ্লেষণের পর যে সিন্ধান্ত তারা দেন অম্লান বদনে তা মেনে নিয়ে সে মুতাবেক আমল করা।
এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে আয়াতটি নাযিল হলেও আমাদের মনে রাখতে হবে যে, উসুলে তাফসীর ও উসূলে ফিকাহর সর্বসম্মত মূলনীতি অনুযায়ী আহকাম ও বিধান আহরণের ক্ষেত্রে আয়াতের বিশেষ প্রেক্ষাপটের পরিবর্তে শব্দের স্বাভাবিক ব্যাপকতার বিষয়টি অগ্রাধিকার লাভ করে থাকে। সুতরাং আলােচ্য আয়াত থেকে এ মৌলিক নির্দেশ আমরা পাই যে, কোন জটিল বিষয়ে হুট করে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরিবর্তে সর্বসাধারণের কর্তব্য হলাে, প্রয়ােজনীয় প্রজ্ঞা ও যােগ্যতার অধিকারী ব্যক্তিগণের শরণাপন্ন হওয়া এবং কোরআন ও সুন্নাহর আলােকে ইজতিহাদের মাধ্যমে তাদের নির্ধারিত পথ ও পন্থা অম্লান বদনে মেনে নেয়া। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় এরই নাম তাকলীদ।।
আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে আল্লামা ইমাম রাজী লিখেছেন
والقياس إما اشباط داخل
قيمت آن استنباط
هادات هذا قتل: الأبية
فيبر ، فوجب أن تكون
بال
ما واحد ها آ في أحكام
المموا ا على
، وثالها آ الكائ بل
بالاستنباط و ئاینیها الإيرباط يجب علي في الماء في
أاح الكراد
সুতরাং প্রমাণিত হলাে যে, ইস্তিদাত ও ইজতিহাদ শরীয়তস্বীকৃত একটি হুজ্জত বা দলিল। আর কিয়াসের প্রক্রিয়াটি ইজতিহাদের সমার্থক কিংবা অন্তর্ভুক্ত বিধায় সেটাও শরীয়তস্বীকৃত হুজ্জত। মােটকথা; এ আয়াত থেকে তিনটি বিষয় স্থীর হলাে, প্রথমতঃ কোরআন সুন্নাহর প্রত্যক্ষ নির্দেশের অবর্তমানে ইজতিহাদের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। দ্বিতীয়তঃ ইজতিহাদ ও ইস্তিদাত শরীয়তস্বীকৃত হুজ্জত। তৃতীয়তঃ উদ্ভূত সমস্যা ও মাসায়েলের ক্ষেত্রে ‘আম’ লােকের পক্ষে আলিমগণের তাকলীদ করা অপরিহার্য।
অবশ্য কারাে কারাে মৃদু আপত্তি এই যে, এটা যুদ্ধকালীন বিশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কিত আয়াত। সুতরাং যুদ্ধ বহির্ভূত ও শান্তিকালীন অবস্থাকে এর আওতাভুক্ত করা যায় না। কিন্তু এ ধরনের স্থূল আপত্তির উত্তরে আগেই আমরা ১ মুক্ত বুদ্ধি আন্দোলন' (উর্দু মাওঃ মুহাম্মদ ইসমাইল ফী কৃত, পৃষ্ঠাঃ ৩১
বলে এসেছি যে, আহকাম ও মাসায়েলের ক্ষেত্রে শানে নুযুলের বিশেষ প্রেক্ষাপট নয় বরং শব্দের স্বাভাবিক ব্যাপকতাই বিচার্য। তাই আল্লামা ইমাম রাজী লিখেছেন,
و کوله اذاجاءهم من الأمن و التي تعا في كل ما
ان الوقائع الر، لا على
باب ما الأمن الخاص في كل ماعلق باب التالي، فت انه ليس في الأماج تخصيصها باعالب
কার পরিস্থিতি দের সাথে আয়াতেরছন ইমাম আবু বুচম
যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি সহ শরীয়তের যাবতীয় আহকাম ও বিধান আলােচ্য আয়াতের বিস্তৃত পরিধির অন্তর্ভুক্ত। কেননা আহকাম সম্পর্কিত সকল ক্ষেত্রেই শান্তি ও শংকার পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। মােটকথা; এখানে এমন কোন শব্দ নেই যা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির সাথে আয়াতের সীমাবদ্ধ সম্পর্ক দাবী করে।
আরাে সম্প্রসারিত আকারে একই উত্তর দিয়েছেন ইমাম আবু বকর জাস্সাস (রঃ)। সেই সাথে বেশ কিছু প্রাসংগিক প্রশ্ন-সন্দেহেরও অত্যন্ত চম ২কার সমাধান পেশ করেছেন তিনি।
এমনকি সুপ্রসিদ্ধ আহলে হাদীস পন্ডিত নওয়াব সিদ্দীক হাসান খান সাহেবও আলােচ্য আয়াতের আলােকে কিয়াসের বৈধতা প্রমাণ করে লিখেছেন।
اس إلى جوازي القياس وا
بيت اليهم .... مايد
في الآية بالإشتیبا
এখানে কিয়াসের বৈধতা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ইজতিহাদ ও ইস্তিষাতের প্রয়ােজনীয়তার প্রতি ইঙ্গিত রয়েছে।
কিন্তু আমাদের বিনীত জিজ্ঞাসা; শান্তিকালীন অবস্থার সাথে আয়াতের কোন সম্পর্ক না থাকলে এর সাহায্যে কিয়াসের বৈধতা কিভাবে প্রমাণ করা যেতে পারে?
- اد
۲۱۳
احكام القان للحصصا ج/۲/ص
তৃতীয় আয়তঃ
و هم طاقه يفها في اليي
كرد كه من ليا ومهما اجا اليهم كلهم من (التوبة، ۱۲۳)
ধর্মজ্ঞান অর্জনের জন্য প্রত্যেক দল থেকে একটি উপদল কেন বেরিয়ে পড়ে না, যেন ফিরে এসে স্বজাতিকে তারা সতর্ক করতে পারে?
আয়াতের মূল বক্তব্য অনুযায়ী উম্মাহর মধ্যে এমন একটি দল বিদ্যমান থাকা একান্তই জরুরী যারা দিবা-রাত্র কোরআন-সুন্নাহর ইলম অর্জনে নিমগ্ন থাকবে এবং ইলম অর্জনের সুযােগ বঞ্চিত মুসলমানদেরকে প্রয়ােজনীয় জ্ঞান দান করবে। আরাে পরিষ্কার ভাষায় একটি নির্বাচিত জামাতের প্রতি নির্দেশ হলাে, কোরআন-সুন্নাহর পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের এবং সর্বসাধারণের প্রতি নির্দেশ হলাে তাঁদের প্রদর্শিত পথ অনুসরণের মাধ্যমে আল্লাহর নাফরমানী থেকে বেঁচে থাকার। তাকলীদও এর বেশী কিছু নয়।
আয়াতের তাফসীর প্রসংগে ইমাম আবু বকর জাস্সাস (রঃ) লিখেছেন।
یا ایسی چم والم الن بول
تلهم
اكب ال
এ আয়াতে আল্লাহ পাক আলিমগণকে সতর্ক করার এবং সর্বসাধারণকে সে সতর্কবাণী মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন। চতুর্থ আয়াতঃ
رالخل ۲۳ والأنبياء )
ملات
فاشتدا آهن الا کے ان
'তােমাদের ইলম না থাকলে আহলে ইলমদের জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।
আলােচ্য আয়াতও দ্ব্যর্থহীনভাবে তাকলীদের অপরিহার্যতা প্রমাণ করছে। কেননা এখানথেকে এ মৌলিক নির্দেশ আমরা পাই যে, অনভিজ্ঞ ও অপরিপক্কদেরকে অভিজ্ঞ ও পরিপক্ক ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হয়ে তাদের নির্দেশ ও সিদ্ধান্ত মুতাবেক আমল করতে হবে। তাকলীদের খােলাসা কথাও এই। তাফসীরে রুহুল মাআনীতে আল্লামা আলুসী লিখেছেন;
بها آيا على وجوب الملعو إعتاءييمالايت واشتد في الاير الجلالي
...... الشرطى انه اتدال بها على جوان تنملي العام في المخ
| আলােচ্য আয়াতে। (শরীয়তের) জটিল বিষয়ে আলেমগণের সিদ্ধান্ত মেনে চলার অপরিহার্যতা প্রমাণিত হচ্ছে। ইমাম সুয়ুতীর মতেও এ আয়াত মাসায়েলের ক্ষেত্রে সাধারণ লােকদের জন্য তাকলীদের বৈধতা প্রমাণ করছে।
অনেকে বলেন, এক বিশেষ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আয়াতটি নাজিল হয়েছে। পূর্ণ আয়াত এরূপ
لا أهل النگی
ما اسلام قبل الآم جالأوي
إليهم إن كلا من
আপনার পূর্বেও মানুষকেই আমি রসূলরূপে পাঠিয়েছি। তােমাদের ইলম না থাকলে আহলে ইলমদের জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওত অস্বীকার করার অজুহাত হিসাবে মক্কার মুশরিকরা বলে বেড়াতে-
"কোন ফেরেশতা রাসূল হয়ে আসলে তার কথা অম্লান বদনে আমরা মেনে নিতাম। তা না করে আল্লাহ তােমাকে কেন রসূল করে পাঠালেন হে!?” কোরেশদের এই বাচালতাই আলােচ্য আয়াতের শানে নুযুল। তদুপরি আয়াতে উল্লেখিত স1 L১। শব্দের অর্থ নিয়ে তাফসীরকারদের তিনটি ভিন্ন মত রয়েছে। যথাঃ- বিজ্ঞ আহলে কিতাবীগণ’ রাসূলের হাতে ইসলাম গ্রহণকারী আহলে কিতাবীগণ ও "কোরআনী ইলমের অধিকারী ব্যক্তিগণ।” সুতরাং শানে নুজুলের আলােকে আয়াতের অর্থ দাঁড়াচ্ছে; “আহলে যিকিরগণ বেশ জানেন যে, অতীতের সব নবী রসূলই মানুষ ছিলেন। অতি মানব বা ফেরেশতা ছিলেন না একজনও। তাদেরকেই জিজ্ঞাসা করে দেখ না কেন?
তাই নির্দ্বিধায় বলা যায় যে, তাকলীদ ও ইজতিহাদ প্রসংগের সাথে আয়াতের পূর্বাপর কোন সম্পর্ক নেই।
এ প্রশ্নের উত্তরে আমাদের বক্তব্য এই যে, A Jals(পরােক্ষ ইংঙ্গিত) এর মাধ্যমে এখানে তাকলীদের বৈধতা প্রমাণিত হচ্ছে। কেননা আহলে যিকিরের যে অর্থই করা হােক, এটাতো স্বীকৃত যে, অজ্ঞতার কারণেই তাদেরকে আহলে যিকিরের শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর এ নির্দেশের গ্রহণযােগ্যতা নির্ভর করছে যে মূলনীতির উপর তা হলো; অনভিজ্ঞ ব্যক্তিকে অভিজ্ঞ ব্যক্তির শরণাপন্ন হতে হবে। আর এ মূলনীতির আলােকেই তাকলীদ এক স্বতঃসিদ্ধ ও অনস্বীকার্য প্রয়ােজনরূপে সুপ্রমাণিত। তদুপরি আগেই আমরা বলে এসেছি যে, উসুলে তাফসীর ও উসূলে ফিকাহর সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মতে আয়াতের উপলক্ষ্য বা শানে নুযুল নয় বরং শব্দের স্বাভাবিক দাবীই হলাে মূল বিচার্য। সুতরাং মক্কার মুশরিকদের উদ্দেশ্যে নাজিল হলেও সম্প্রসারিত অর্থে এখানে এ মূলনীতি অবশ্যই প্রমাণিত হচ্ছে যে, সাধারণ মুসলমানদের জন্য আহলে ইলমদের শরণাপন্ন হওয়া জরুরী। তাই আল্লামা খতীবে বােগদাদী (রঃ) লিখেছেন।
الأحكا هالعا النبي لايت له اللي أقام الشرعية، يجره که آن قلي
الاول بقولہ قال الله تعالى مما أهل الت کے ان تكون
শরীয়তী আহকাম থেকে বঞ্চিত সাধারণ লােকদের উচিত কোন বিজ্ঞ আলিমের নিদের্শ পালনের মাধ্যমে তাঁর তাকলীদ করে যাওয়া। কেননা আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, তােমাদের ইলম না থাকলে আহলে ইলমদের জিজ্ঞাসা করে জেনে নাও।।
অতঃপর আল্লামা বােগদাদী নিজস্ব সনদ ও সূত্রযােগে ছাহাবী হযরত আমর বিন কায়েস রাযিয়াল্লাহু আনহুর মতামত উল্লেখ করে লিখেছেন; W৫। S) এর অর্থ ‘আহলে ইলম’ ছাড়া অন্য কিছু নয়।
তাকলীদ ও হাদীস আল-কোরআনের
বিভিন্ন আয়াতের পাশাপাশি অসংখ্য হাদীসও পেশ করা যেতে পারে তাকলীদের সমর্থনে। তবে সংকুচিত পরিসরের কথা বিবেচনা করে এখানে আমরা কয়েকটি মাত্র হাদীস কিঞ্চিত আলােচনাসহ পেশ করছি। প্রথম হাদীসঃ
ع تيقة رضى الله تعالى عنه قال قال رسول اللوصلى الله
فات ودا بالبنين من عليہ
وستم إتيلا دي مابقالي في
در راه الترمذي وابن ماجه
راحمد) ی
آلج تگی که ب
হযরত হােজাইফা রাযিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কর্তৃক বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, জানি না; আর কত দিন তােমাদের মাঝে আমি বেঁচে থাকবে। তবে আমার পরে তােমরা আবু বকর ও ওমর এ দুজনের ইকতিদা কারে যাবে।
এখানে $1-3) শব্দটির ব্যবহার অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা, ধর্মীয় আনুগত্যের অর্থেই শুধু এর ব্যবহার হয়ে থাকে। প্রশাসনিক আনুগত্যের অর্থে নয়।
সুপ্রসিদ্ধ আরবী ভাষাবিদ ও আভিধানিক আল্লামা ইবনে মঞ্জুর লিখেছেন
ماتت به
القوة والقد
অর্থাৎ যার সুন্নত বা তরীকা তুমি অনুসরণ করবে তাকেই শুধু কুদওয়া বলা যাবে। কিছুদুর পর তিনি আরাে লিখেছেন । ) অর্থাৎ 12 ও । শব্দ দুটি সমার্থক। উভয়ের অর্থ হলাে 'আদর্শ',
দ্বীন ও শরীয়তের ক্ষেত্রে নবী ওলীগণের আনুগত্যের নির্দেশ দিতে গিয়ে কোরআনুল করীমেও এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে
-
-
--
-
-
لسان العرب /ج۲/ص/۳

No comments